একেক জাতি একেক রকমের আইন, নিয়ম নীতি অনুসরণ করে থাকে।আর কিছু কিছু জাতির আইন নিয়ম নীতিতে এমন সব বৈচিত্র্যের দেখা মেলে, যা বিস্মিত করে অন্যদের। তেমনি কিছু আইন, নিয়ম, নীতি সম্পরকে চলুন জেনে নিই 



১। এক স্ত্রী নিয়েই সংসার

আজব এক প্রথা মানেন পাঞ্জাবারে মানসার বোহা গ্রামের আদিবাসীরা। সেখানে এক স্ত্রী নিয়েই সংসার পাতেন পরিবারের সব ভাইয়েরা। ওই গ্রামের শত শত বছরের এই প্রথা মেনেই কোনো কোনো নারীরা ৫-৭ স্বামী নিয়ে সংসার করছেন।২০২১ সালে এসেও অদ্ভুত এই ঘটনার সাক্ষী বিশ্ব। তবে তারা ঠিকই দিব্যিই এই রীতি মেনে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিচ্ছেন। কারও মনে নেই কোনো অভিযোগ। বংশপরম্পরায় চাষযোগ্য জমির সংকট, দারিদ্র্যের কষাঘাত এবং নারী-পুরুষ জনসংখ্যার আনুপাতিক হ্রাসের কারণেই এই প্রথা মানতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

২। কোমর বাড়াতে পারবে না

জাপানের জনগণের গড় আয়ুষ্কাল বেশি। এর পেছনে রয়েছে স্বাস্থ্য সচেতনতা। কিন্তু মানুষের মাঝে এই সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রয়েছে বেশ কিছু আইন। এর মধ্যে একটি হলো ৪০ বছরের বেশি কেউ ভুঁড়ি বা কোমর বাড়াতে পারবে না। সে দেশের কর্মদক্ষ জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশই হলো প্রবীণ। বয়স্ক এই কর্মী বাহিনীকে কর্মক্ষম রাখার জন্য ২০০৮ সালে আইন করে ৪০ থেকে ৭৫ বছর বয়সীদের কোমরের মাপ ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী জাপানে কোনো দফতর বা কারখানা যদি তাদের মোটিয়ে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা ২৫ ভাগ কমাতে না পারে, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা। এর ফলেই জাপানের মানুষজন  বেশি কর্মদক্ষতা দেখাতে পারে।

৩। প্রতিদিন একঘণ্টা ধরে কাঁদেন

বিয়ের সময়ে বাঙালি মেয়েদের কান্না তো দেখেছেন। কিন্তু চিনের তুজিয়া সম্প্রদায়ের মেয়েরা বিয়ের আগের তিরিশ দিন প্রতিদিন একঘণ্টা ধরে কাঁদেন। প্রথম দশ দিনের মাথায় মেয়ের মা তাঁর সঙ্গে কাঁদেন। তার দশ দিন পরে ঠাকুমা যোগ দেন। এইভাবে পরিবারের সব মহিলারা একে একে কনের সঙ্গে যোগ দিয়ে একঘণ্টা ধরে কাঁদেন।



৪। অন্যের বৌ চুরি 

আফ্রিকার নাইজারে ওয়াড্ডাবে উপজাতিরা আবার অল্প বয়সে বিয়ে করে। কিন্তু পরে পরিণত বয়সে তারা অন্যের বৌ চুরি করে। এটাই তাদের রীতি। এবং চুরি করে যদি ধরা না পড়ে তাহলে সেই জুটিকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

 

৫। শব্দ দূষণ আইন

স্বপ্নের দেশ মনে করেন অনেকেই সুইজারল্যান্ডকে। অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের দেশ এটি। প্রতিবছর এখানে বহু লোক পর্যটক হিসেবে আসে। যদি কখনো সুইজারল্যান্ড যেতে চান তাহলে এ বিষয়টি আপনাকে জানতেই হবে। সুইজারল্যান্ডে কখনই রাত ১০টার পর কমোড ফ্ল্যাশ করতে পারবেন না। সুইজারল্যান্ড সরকার রাত ১০টার পরে ফ্ল্যাশ করাকে শব্দ দূষণ হিসেবে ধরে। শব্দ দূষণ রোধে পৃথিবীতে নানা দেশেই রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়মকানুন। এ সংক্রান্ত আইনকে বলা হয় উচ্চ শব্দ অথবা হুইসেলিং আইন। অন্টারিওতে অবস্থিত পেট্রলিয়া শহরে উচ্চমাত্রার শব্দের ওপরও আইন বহাল আছে। কোনো প্রকার হৈ-হুল্লোড়, চিৎকার-চেঁচামেচি, হুইসেলিং, এমনকি উচ্চৈঃস্বরে গান গাওয়া পর্যন্ত নিষেধ সেখানে। সুতরাং চাইলেই অনুষ্ঠান আয়োজন করে পার্টি করা যাবে ন আর যদি তা করতেই হয় তবে আপনাকে তা করতে হবে কোনো প্রকার শব্দ  দূষণ করা ছাড়া।

৬। হবু স্ত্রীকে চুরি

প্রাচীন স্পার্টা নগরীতে হবু বউয়েরা মাথার চুল কামিয়ে ছেলেদের মতন পোশাক-আশাক পরে তৈরি থাকতো। এর পরের কাজটুকু ছিল মূলত হবু বরের অগ্নি পরীক্ষা। বিয়ের ইচ্ছে থাকলে সবার চক্ষু ফাঁকি দিয়ে এই ছেলে সেজে থাকা তার হবু স্ত্রীকে চুরি করে নিয়ে পালাতে হতো তাকে। তবেই কেবল সে নিজেকে বিয়ের উপযুক্ত বলে প্রমাণ করতে পারতো।

 

৭। ভোঁতা তীর

চীনের ইউগুরস ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিয়েতে এক ভয়ানক নিয়ম পালন করতে হয়। বরকে তিনটি ভোঁতা তীর ছুড়তে হয় কনেকে লক্ষ্য করে। এই তীর লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হলে বেশ ব্যথা পেতে হয় কনেকে। এরপর বর ওই তীরগুলো নিয়ে ভেঙে ফেলে, যাতে এগুলো আর কখনও তার স্ত্রীকে আঘাত করতে না পারে।

Leave a Comment