আধুনিক বিশ্বে নানা ধরণের উন্নতমানের হোটেল রয়েছে যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সবই রয়েছে। কিন্তু এমন কিছু হোটেল আছে যা একেবারেই ব্যতিক্রম। এই হোটেলগুলোতে আবকাশযাপন করলে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়। এমনি কিছু উদ্ভট হোটেল নিয়ে আজকের ফিচার।

1. ওলদসেলগারতেন রিসোর্ট

জার্মানির এক অসাধারণ জায়গা হল এটি। রাতে ঘরের বাইরে নিরাপদ জায়গায় রাত্রিযাপনের জন্য চমৎকার একটি জায়গা এটি। এটি জার্মানির ব্যাভেরিয়াতে অবস্থিত। উঁচু গাছের উপর নির্মাণ করা হয় এই তাবু। সুউচ্চ এই স্থান থেকে চারপাশের সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারবেন। তবে এখানে রাতে থাকতে হয়। মাটি থেকে ৩২৮০ ফুট উঁচুতে তাবু অবস্থিত। একে দুঃসাহসিক ভ্রমণ বলেও অনেকে মনে করেন। এখানে প্রতি রাতে থাকতে ৩০০ ডলার ব্যয় করতে হয়।



2. গাছ হোটেল

সুইডেনের হারাডা নামক এক গ্রামে গাছের উপর এই হোটেলটি অবস্থিত। স্ক্যান্ডিনেভিয়ার একদল দক্ষ স্থাপত্যবিদ একসাথে পাঁচটি আলাদা পরিকল্পনা করে এই গাছের হোটেল নির্মাণ করে। সুইডেন শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে লুলিয়া শহরের কাছে লুলে নদীর কাছে এই গাছের হোটেল অবস্থিত।মাটি থেকে ৪-৬ মিটার উচুতে হোটেলটি অবস্থিত। এই হোটেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় কক্ষ হল মিররকিউব। এই কক্ষে রয়েছে একটি ডাবল বেড,বাথরুম,লাউঞ্জ এবং ছাদের বারান্দা। এই কক্ষে থাকতে হলে প্রতিদিন ৬৫০ ডলার লাগবে। অন্যান্য রুমের জন্য লাগবে একজনের জন্য ডলার ১৫০,দুই জনের জন্য ৫০০ ডলার।

3. ক্যাপসুলভ ভ্যালু কান্ডা

জাপানে অবস্থিত ক্যাপস্যুলভ ভ্যালু কান্ডা নিজেই এক আশ্চর্য। এই হোটেলে রাত্রিযাপনের জন্য আপনার জন্য বরাদ্ধ থাকবে ৭ থেকে ৮ ফুট সাইজের একটি ক্যাপসুল রুম। গোটা জাপানজুড়ে এরকম আরও বেশ কয়েকটি ক্যাপসুল হোটেল রয়েছে। একেকটি ক্যাপসুল হোটেলে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টি ক্যাপসুল রুম থাকে। এই হোটেলে প্রত্যেক ফ্লোরে আলাদা করে ওয়াশরুম রয়েছে এবং পর্যটকদের জিনিসপত্র রাখার জন্য প্রথম ফ্লোরে আছে একটি লকার। এই ছোট্ট ক্যাপসুল রুমের মধ্যেই টিভি, রেডিও, ওয়াফাই, এসি সহ আদর্শ হোটেলরুমের মতো মোটামুটি প্রায় সব সুবিধাই বিদ্যমান।

4. দ্যা স্যান্ড হোটেল

২০০৮সালে এই বালু হোটেল  নির্মাণ করা হয়। এটি বিশ্বের সর্বপ্রথম হোটেল যা সৈকতের বালু দ্বারা নির্মিত হয়। সমুদ্র থেকে ৪মিটার উঁচুতে হোটেলটি অবস্থিত।১০০০টন বালু ব্যবহার করা হয় হোটেলটি নির্মাণ করতে। মার্ক অ্যান্ডারসন এই হোটেলটির নকশাকর। আরও ৬জন সহযোগী নিয়ে প্রতিদিন ১৪ঘণ্টা করে  কাজ মোট ৭দিন সময় লাগে হোটেলটি নির্মাণ করতে। এর অভ্যন্তরের সাজসজ্জা,বিছানা সব বালুর তৈরি। এখানে রাত প্রতি থাকার খরচ ১০ পাউন্ড।

5. জুক্কাসজার্ভি আইস হোটেল

সুইডেনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানগুলোর একটি হলো জুক্কাসজার্ভির এই আইস হোটেল। এটি ১৯৯০ সাল থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিলো। স্থানীয় একটি লেকের জমে থাকা বরফ কেটে নান্দনিক ডিজাইনে বানানো এই হোটেলটি পৃথিবীজুড়ে এক আশ্চর্যের নাম। এই হোটেলের প্রত্যেকটি জিনিস বরফের তৈরি। এখানে ৫০ টির উপরে রুম এবং ভোজনবিলাসীদের জন্য একটি রেস্টুরেন্টও আছে। জুক্কাসজার্ভি আইস হোটেল পৃথিবীর সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ বরফের তৈরি হোটেল। এই হোটেলের তাপমাত্রা সবসময় মাইনাস ৫ ডিগ্রির আশেপাশে থাকে।

6. সালা সিল্ভারমাইনঃ

আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ভূগর্ভস্থ কোন হোটেলে। সুইডেনে আছে এমন একটি ভূগর্ভস্থ হোটেল যেটি স্টকহোম থেকে উত্তর-পশ্চিমে ১২০ কিমি দূরে অবস্থিত। ধারণা করা হয় এটি বিশ্বের  সর্বনিম্ন-হোটেল। এর গভীরতা প্রায় ১৫৫মিটার। হোটেলটি নির্মাণ করার আগে এখানে একটি রূপার খনি ছিল। হোটেলের ব্যবস্থাপনা দ্বারা পরামর্শ দেওয়া হয় যে, এখানে আসার পূর্বে অধিক গরম কাপড় সাথে নিয়ে আসতে কারণ হোটেলের রুমের বাইরে তাপমাত্রা প্রায় ৩ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। আপনি সেখানে সেলফোন ব্যবহার করতে পারবেন না কিন্তু ওয়ারলেস ডিভাইসের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে পারবেন সবার সাথে। সারাবছরই হোটেলটি চালু থাকে।

7. মানটা রিসোর্ট

তাঞ্জানিয়ার উপকূলে ভারত মহাসাগরে এই ডুবো রিসোর্ট অবস্থিত। এই রিসোর্টটির নাম মানটা রিসোর্ট যা পানির নিচে অবস্থিত। উপকূল থেকে ২৫০ মিটার দূরে এই রিসোর্ট অবস্থিত। পানির তলদেশে ৪ মিটার নিচে রয়েছে ২টি শয়নকক্ষ। এছাড়াও রয়েছে একটি বিশ্রাম ডেক এবং ডাইনিং এর জন্য লাউঞ্জ। রুমের দেয়ালে এমন ধরনের দুটি জানালা আছে যা দিয়ে ৩৬০ডিগ্রী ভিউতে বাইরের দৃশ্য দেখা যায়। রাতে নিকটবর্তী সমুদ্রদৃশ্য দেখার জন্য ডুবো স্পতলাইট আছে। এখানে থাকতে প্রতিদিনের জন্য ১২০০ ডলার খরচ করতে হবে।

 

 

Leave a Comment