বন্ধুরা যদি আপনাদের কে কোন প্রাণী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে আপনাদের মনে হয়তো অনেক প্রাণী এবং তার ছবি ভেসে উঠবে যেগুলো আপনি কোথাও না কোথাও অবশ্যই দেখেছেন,  কিন্তু যদি আপনাদেরকে এটা জিজ্ঞাসা করা হয় আপনি কি এমন কোন প্রাণী দেখেছেন,  যেটা অদৃশ্য হয়ে থাকে।  শুনে হয়তো আপনি অবাক হয়ে যাবেন এবং আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন যে সত্যিই কি এমন কোন প্রাণী আছে যেটা অদৃশ্য হয়ে যায়। আপনার ধারণা ভাঙতে আজকে আমাদের এই ব্লগ আজকের এই ব্লগে এমন কিছু প্রাণী কে দেখাবো যারা সত্যিই রয়েছে কিন্তু তাদের দেখা যায় না। আরো দেখাবো তারা কোথায় থাকে এবং কিভাবে জীবন যাপন করে। আজ আমি আপনাদেরকে এমন এক দুনিয়ায় নিয়ে যাব যেখানে অনেক প্রাণী আছে কিন্তু দেখা যায় না তো চলুন শুরু করি আজকের ব্লগ



1. LEAF TAILED GECKO

এখন এই লিফ  টাইলেড গেচকো টাকেই দেখে নিন, এর কাছে নিজেকে বাঁচানোর অদ্ভুত কৌশল রয়েছে। এরা নিজেদের গাছের উপরে এমন ভাবে বসিয়ে নেয় যে, বড় বড় এক্সপার্টরাও এদেরকে চিনতে ধোকা খেয়ে যায়।  মানুষের এটা ঠিক করা মুশকিল হয়ে যায় যে,  এটা কোন শুকনো পাতা নাকি গাছের উপরে আসন দিয়ে বসে থাকা কোন জীব।  এই আজব প্রাণী টি ম্যাডাগ্যাস্কার আইসল্যান্ডে পাওয়া যায়।  শুধু এটাই নয়, জায়গার প্রয়োজনে নিজের রং বদলানোর ক্ষমতাও থাকে এদের।  এখন কথা বলি এদের খাবার-দাবারের ব্যাপারে,  তো ছোট ছোট পোকামাকড় খেয়েই এরা বেঁচে থাকে।




2. THE BUFF TIP MOTH

এখন এই পিকচার টি দেখে আপনার মনে হতে পারে এটা কোন শুকনো কাঠের টুকরো, তো এমনটা ভেবে আপনি ভুল করছেন, কারণ এটা কোন কাঠের টুকরা নয় বরং এটা বাফ টিপ মউথ নামক একটা প্রাণী।  আর এটা দুনিয়ার সবচেয়ে অদৃশ্য প্রাণীর ভিতর একটা।  এর কারণ এই প্রাণীটির উপরে যে কারোরই সহজে নজর পড়ে না।  দা বাফ টিপ মউথ বেশিরভাগ জঙ্গলে এবং গার্ডেনে পাওয়া যায়। আর এটা জুন-জুলাই মাসে বেশি দেখা যায়। এখন বলি এদের থাকার জায়গার কথা, তো দা বাফ টিপ মউথ বেশিরভাগ গাছের ভিতর লুকিয়ে থাকা পছন্দ করে

 


 

3. LEAF INSECT

বন্ধুরা এই পিকচার টি দেখে আপনার মনে হতে পারে এটা কোন পাতা , তো আমি আপনাকে বলছি এটা কোন পাতা  নয় , বরং এটা পাতার মতো দেখতে একটা প্রাণী, যাকে আমরা লিফ ইনসেক্ট নামে চিনি। আসলে এই জীব জঙ্গলে থাকা অনেক প্রানিরি পছন্দের খাবার, তাই বেঁচে থাকার জন্য লিফ ইনসেক্ট কে এরকম পদ্ধতি বেছে নিতে হয়। নিজের জানের উপর একটুও আক্রমণ বুঝতে পারলে এই জীব একেবারে ফ্রিজ হয়ে যাই, যাতে কেউ তাকে দেখতে না পাই। যদি বলি এদের খাবার-দাবারের কথা, তো গাছের উপরে যে ফল হয় সেই ফল খেয়ে এরা বেঁচে থাকে, আর যদি বলে এরা কোথায় থাকে, তবে এরা তাদের পুরো জীবন গাছেই কাটিয়ে দেয়।



4. EASTERN SCREECH OWL 

এবার এই পিকচার টা দেখুন, এটা দেখে নিশ্চয়ই আপনি চমকে উঠেছেন, যে এরকম চোখ ওয়ালা গাছ সত্যিই কি হয়, তো এক মিনিট অপেক্ষা করুন, এটা কোন চোখ ওয়ালা গাছ নয় বরং এটা গাছের উপরে বসে থাকা একটি আউল, যার নাম EASTERN SCREECH OWL 

আর এর গুন এটা যে, যখন সে শুকনো কোন গাছের উপরে বসে তখন নিজেকে এমন ভাবে বসায়,  যে দূর থেকে দেখলে শুধু তার চোখ দেখা যায়, আর যদি সে গাছে বসে তার চোখ দুটো বন্ধ করে নেয় তাহলে একেবারে গাছের সঙ্গে মিশে যাবে।  এরকম অবস্থায় কেউই দেখে বলতে পারবে না যেটা গাছ নাকি গাছের উপর বসে থাকা কোন প্রাণী।  এবার বলি এদের থাকার কথা, তো শুকনো গাছ এদের পছন্দের থাকার জায়গা কারণ শুকনো গাছের ভেতরে এরা নিজেকে সহজেই লুকিয়ে ফেলতে পারে



5. PYGMY SEAHORSE

বন্ধুরা সাধারণত সমুদ্রে যত ছোট প্রাণী থাকে তাদের জীবনযাপন করতে অনেক সমস্যা হয়,  কারণ সমুদ্রে থাকা বড় প্রাণীরা এদেরকে সহজেই শিকার করতে পারে। পিগমি সিহর্স খুব ছোট একটা সামুদ্রিক প্রাণী। যার শরীর দুই সেন্টিমিটার এর কাছাকাছি হয়, কিন্তু পিগমি সিহর্সের একটা সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হচ্ছে, এটা দরকারি সময় নিজের কালার পরিবর্তন করে নিতে পারে।  যার কারণে মানুষ তো দূরের কথা, কোন প্রাণীও তাকে চিনে নিতে পারে না। পিগমি সিহর্স সাধারণত জাপান, ইন্দোনেশিয়া এবং নর্থ অস্ট্রেলিয়ায় পাওয়া যায়।



6. LEPTO CEPHALUS

আয়নার মতো দেখতে এই প্রাণী লেপ্টো সেফালাস নামে পরিচিত, এটা এমন এক সামুদ্রিক প্রাণী, যে নিজেকে অদৃশ্য করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয়তা রয়েছে তার।  যখন সে ডিমের ভেতর থেকে বাহির হয়, তখন তার শরীর পুরোপুরিভাবে ট্রান্সপারেন্ট হয়ে যায়, যার কারণে অন্য সামুদ্রিক প্রাণী তাকে সহজেই দেখতে পায়না। এমন অবস্থায় এরা অন্য সামুদ্রিক প্রাণীর আঘাত থেকে নিজেকে সহজেই বাঁচাতে পারে। লেপ্টো সেফালাস ডিম থেকে বাহির হওয়ার পর, তিন মাস পর্যন্ত এরকম অদৃশ্যভাবে থাকে। আর যখন সে বুঝতে পারে যে, এখন সে নিজেই নিজের রক্ষা করতে পারে,  তখনি সে নিজের আসল চেহারায় ফিরে আসে।  নিজের শরীরের রং বদলানোর ক্ষমতা  সে জন্মগতভাবেই পেয়ে থাকে,  যেটা ব্যবহার করে সে অনেক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।



7. OAK LEAF BUTTERFLY

বন্ধুরা আপনি যখন কোন পার্কে ঘুরতে যান তখন, আশেপাশে অনেক ধরনের কালারফুল বাটারফ্লাই উড়তে দেখে থাকবেন, কিন্তু এই ভিডিওটি দেখার পরে যদি কেউ আপনাকে জিজ্ঞাসা করে এটা কি? তাহলে আপনার একটাই উত্তর হবে যে এটা কোন শুকনো পাতা। কিন্তু এরকম মোটেই নয়, কারণ এটা কোন পাতা নয় বরং এটা একটা বাটারফ্লাই।  যার নাম ওক লিফ বাটারফ্লাই।  যা দেখতে সাধারণত একটি শুকনো পাতার মতোই লাগে, কিন্তু এই বাটারফ্লাই ভিতর থেকে ভিশন কালারফুল হয়। জঙ্গলে এদেরকে খোঁজা অনেক কষ্টকর হয়ে ওঠে। এই প্রজাপতি সাধারণত নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে পাওয়া যায়।



8. GRAY TREE FROG

এটা ফ্রগ এর এমন একটি প্রজাতি, যেটা সাধারনত গাছে থাকতে পছন্দ করে। গ্রে ট্রি ফ্রগ নিজের শরীরের রং বদলানোর জন্য এক্সপার্ট হয়ে থাকে।  নিজের ওপর আক্রমণ হলেই এটা গাছের কালারের সাথে নিজের কালার বদলিয়ে নেয়, যাতে তাকে কেউ দেখতে না পায়।  এদেরকে সাধারণত আমেরিকা এবং সাউথ কানাডাতে পাওয়া যায়। এদের কালার হোয়াইট, গ্রে এবং ব্রাউন হয়ে থাকে  আর এদের সাইজ 2 ইঞ্চ এর কাছাকাছি হয়।



9. MOSSY FROG

এখন আমি কথা বলব মসি ফ্রগ বা  শ্যাওলা ব্যাঙকে নিয়ে,  কিন্তু তার আগে এই প্লান্ট টিকে দেখে নিন, এটি মসি প্লান্ট হিসাবে পরিচিত।  আর এই প্লান্ট পানিওয়ালা জায়গায় দেখা যায়।  মসি ফ্রগের এই নাম এই প্ল্যান্টের কারণেই হয়েছে। কারণ এই প্রাণী এই ধরনের প্ল্যান্টের  ভেতরে নিজেকে খুব সহজে লুকিয়ে নিতে পারে।  আপনার সামনে যদি কখনো মসি ফ্রগ পড়ে তাহলে বিশ্বাস করেন আপনার জন্যও এটা চেনা কষ্টকর হয়ে যাবে যে, এটা সত্যিই কোনো ফ্রগ নাকি কোন প্লান্টের টুকরা।  আমি আপনাকে বলে দিচ্ছি এটা মসি ফ্রগ নামকই জীব।  যেটা মসি প্লান্ট এবং আরো যেসব প্লান্ট রয়েছে তাদের ভেতরে, নিজেকে এমনভাবে লুকিয়ে রাখে যে, মানুষের জন্য এটা বুঝে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে যে, এটা কোন ফ্রগ নাকি কোন প্লান্ট।  মসি ফ্রগের আগের আকার, 5 থেকে 6 সেন্টিমিটার এর কাছাকাছি হয়।  আর এটা বেশিরভাগই ভিয়েতনামে পাওয়া যায়



10. PINK WINGED STICK

বন্ধুরা এই দুনিয়ায় অনেক ধরনের জীব রয়েছে যাদের শরীরের কালার গাছের পাতা এবং গাছের মত হয়।  Pink winged stick এমনই একটা প্রাণী।  আর এই প্রাণীটির এমনই ক্ষমতা যে, এটা যে কোন জায়গায় নিজেকে অদৃশ্য করে নিতে পারে।  তার সাথে এর আরো একটা গুণ আছে যে এটা নিজের উপরে আক্রমণ হলেই, এমন অভিনয় করে যেন ঠিক মরে গেছে।  নিজের নড়াচড়া একেবারেই বন্ধ করে দেয় এবং একটা মরে যাওয়া জীবের মতই চুপচাপ পড়ে থাকে।  Pink winged stick বেশিরভাগ সাউথ চায়না, অস্ট্রেলিয়া এবং মাদাগাস্কার এ পাওয়া যায়।



11. OCTOPI

এখন এই জীবটাও দেখেনিন, এর নাম অক্টোপাস।  যার সমুদ্রের এনিমেলএর ভেতরে সবচেয়ে ভয়নঙ্কর উপাধি আছে।  অক্টপায়ী অক্টোপাস এর এমনই এক প্রজাতি যে, পুরো দুনিয়ায় সবার থেকে আলাদা।  এখন আপনি হয়তো ভাবছেন যে, এই অক্টোপাস কিভাবে অদৃশ্য হতে পারে?  তো আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে, এই অক্টোপাসের কাছে জায়গা হিসেবে রং বদলানোর অসাধারণ ক্ষমতা থাকে। যে ক্ষমতা সে প্রাকৃতিক ভাবে পেয়ে থাকে।  সাধারণত অক্টোপাস এর রং স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে কিন্তু নিজের উপর আক্রমণ হলেই সেই জায়গার হিসাবে নিজের রং বদলিয়ে নেই সে।



12. WILLOW PTARMIGAN

বন্ধুরা এই দুনিয়ায় অনেক ধরনের পাখি পাওয়া যায় কিন্তু WILLOW PTARMIGAN নামক পাখি, বাকি পাখিদের থেকে আলাদা, ইউনিক এবং খুব সুন্দর হয়ে থাকে। এবং এর রং পিওর হোয়াইট হয়ে থাকে।  যার কারণে কারণে শীতের সময় এই পাখিটাকে দেখতে পাও পাওয়া খুবই মুশকিল।  এর রং এতটাই সাদা হয়ে থাকে যে, বরফ এর ভিতর এই পাখিটা বসে থাকলে তাকে দেখতেই পাওয়া যায় না।  তখন পুরোপুরি ইনভিসিবল হয়ে যায় এই পাখি।  WILLOW PTARMIGAN বিশেষ করে আলাস্কা এবং নর্থ আমেরিকায় পাওয়া যায়।  এবং এর সাইজ এক ফুটের কাছাকাছি হয়। আর এর ওজন আধা কেজির একটু বেশি হয়।

 

তো বন্ধুরা আজকের ব্লগটি এই পর্যন্ত আপনার জীবনে যদি কখনো এরকম ইনভিজিবল এনিমেল এর সাথে দেখা হয়, তাহলে আমাকে অবশ্যই জানাবেন। 

Leave a Comment